পাতাল
রেল
দিপাঞ্জন
চাকলাদার
১
পাখী
অন্যমনস্ক ভাবে
ঘনঘন নখ
খুঁটছিল দাঁত
দিয়ে।
হাতে ধরা
মোবাইলটা মানিব্যাগের
চাপে ঈষৎ
নত।
ও দাঁড়িয়ে
আছে কালিঘাট
মেট্রোর সামনে।
প্রায় কুড়ি
মিনিট হতে
চলল আকাশের
পাত্তা নেই।
ডংডং করে
জনা বারো
জন যাএী
নিয়ে ট্রামটা
মুখের সামনে
দিয়ে বেরিয়ে
যেতেই পাখী
আঙুলটা মুখ
থেকে সরিয়ে
বিড়বিড় করল
"একদিনও
যদি পাজীটা
সময়মত আসে"।
মাথার উপর
উড়তে থাকা
মশার দলের
মতই ভাবনাগুলো
দ্রুত জড়ো
হচ্ছিল পাখীর
মাথায়... আর
দেরি করলে
দমদম থেকে
৫-২৮
এর রাণাঘাট
লোকালটা পাবে
না।
দেরি হলে
মাকে কি
জুৎসুই ঢপ
দেবে ভাবতে
গিয়ে মায়ের
মুখটা ভেসে
উঠল।
মায়ের থমথমে
মুখটা চিন্তা
করে বুকের
ভেতরটা শুকিয়ে
গেল ওর।
আকাশ মোবাইলটার
সুইচ অফ
করে রেখেছে
- কেন
রেখেছে ? - ওই
খ্যাপাই জানে।
নখ খোঁটা
বন্ধ করে
দাঁতে কিড়
মিড় করছিল
পাখী।
"আজ
আসুক, এখানে
সবার সামনে
কানধরে না
ওঠ-বোস
করিয়েছিতো আমার
নাম নয়"।
দৃশ্যটা কল্পনা
করে এত
রাগেও মুখে
হাসি চলে
এল পাখীর।
"কিরে
এখানে একা
দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে
হাসছিস কেন?
কি ব্যাপার?”
চমকে
তাকাতেই পাখী
দেখল সামনে
লতিকা মাসী
দাঁড়িয়ে।
............
২
"পরবর্তী
স্টেশন এসপ্ল্যানেড,
প্ল্যাটফর্ম
ডানদিকে...... আগলা
স্টেশন এসপ্ল্যানেড
প্ল্যাটফর্ম
ডাইনে তরফ.......
দ্য নেক্সট
স্টেশন ইজ............."
আকাশের
ঘুমটা হঠাৎ
ভেঙে গেল...
স্টেশনের
নামটা কানে
যেতেই একটা
ঠান্ডা স্রোত
সারা শরীর
দিয়ে বয়ে
গেল।
আর প্রায়
সঙ্গে সঙ্গে
মুখের ছিটকিনি
খুলে বেরিয়ে
এল কথা
গুলো-
"যাহ!
কালিঘাট
তো পেরিয়ে
গেছে - কি
হবে এখন?".....
আকাশ
ওঠার শক্তি
পায়না।
দ্রুত পকেট
থেকে মোবাইল
নিয়ে সুইচ
অন করতেই
দেখল সুইচ
অফ।
"ক্যানো?"...মাথাটা
ঘুরে গেল.......
"ওহ
শিট!!" একগুচ্ছ
দীর্ঘ নিশ্বাসের
সঙ্গে বাক্যটা
যেন উপহার
হিসাবে বেরলো।
ওর মনে
পড়ল MD-র
ঘরে মিটিং
ছিল বলে
সুইচ অফ
করা ছিল।
দুদিন আগে
MD-র ঘরে
সাইলেন্ট মোডে
থাকা মোবাইলটা
আচমকা জোরে
ভাইব্রেটারে কেঁপে
ওঠাতে ও
নিজেও মোবাইলের
থেকে বেশি
কেঁপে উঠেছিল।
যেটা MD-র
নজর এড়ায়নি।
পরে Boss তুষার
পাএ বলেছিল
"মিটিংএর
সময় মোবাইলটা
বন্ধ রাখবেন
- স্যার
অসন্তুষ্ট হন।
"
চুল
ছিঁড়ে ফেলতে
চাইল আকাশ
"ওফ
ক্যানো এত
ভুল হয়
?" ওর
নখ ঈগলের
মত পাখীর
নম্বরে আঘাত
করছিল।
"দাদা
এখানে কোন
টাওয়ার পাবেন
না"।
আকাশ মুখ
তুলে তাকাল।
দাঁড়ান ফরসা
সুশ্রী মুখো
ছেলেটা আবার
বলল
"আমরা
যেখানে দাঁড়িয়ে
আছি সেখানে
কোন টাওয়ার
পাবেন না"।
"দাঁড়িয়ে
আছি !!"
আকাশের
মুখ দিয়ে
শব্দ দুটো
ছিটকে বেরল
আর বেরতেই
মুশকিলে পড়ল
আকাশ - কেননা
কামরার সারি
সারি মুখ
এখন ওর
দিকে সার্চ
লাইটের মত
ওঠা নামা
করছে।
৩
যেখানে
বাঘের ভয়
সেখানে কেন
যে তখুনি
সন্ধে হয়
কে জানে।
পাখী এতটাই
চমকে গিয়েছিল
যে উত্তর
দেবার বদলে
নিজেই প্রশ্ন
করে বসল-
"লতিকা
মাসি তুমি
এখানে ?" লতিকা
মাসি মুখের
ঘাম মুছে
মৃদু হাসলেন,
"খুব
চালাক হয়েছিস
দেখছি...... উল্টে
আমাকেই প্রশ্ন
করছিস?"।
পাখী নিজেকে
দ্রুত সামলানোর
চেষ্টা করে
। "না
না মাসি
তোমাকে এখানে
দেখে খুব
অবাক হয়েছি
তো তাই
- "
"থাক
আর অবাক
হয়ে কাজ
নেই বাপু......
তুই হাসছিলি
কেন পাগলের
মত সেটা
বল"।
লতিকা মাসিকে
নাছোড়বান্দার মত
দেখায়।
পাখী হালকা
হাসে,
"আরে
একটু আগে
একটা জোকস
বন্ধু মোবাইলে
পাঠিয়েছিল - সেটা
মনে পড়াতে
হাসছিলাম"।
টুপিটা জম্পেস
করে বসে
গেল লতিকা
মাসির মাথায়
।
মাসি
যেন একটু
মনক্ষুণ্ণ হলেন,
"অ,
তা তুই
দাঁড়িয়ে আছিস
কেন? বাড়ি
যাবি না?"
পাখী একটু
গম্ভীর হয়,
"ওই
একজনের আসার
কথা ছিল
-"।
"কার
রে? তোর
মনের কেউ?"
লতিকা
মাসি ভ্রুরু
নাচিয়ে মুচকি
হাসেন ।
পাখীও হেসে
ফেলে,
"মনের
নয়, গল্পের
গো মাসি........
বনে গেছে
গরু চরাতে"।
বলেই পাখী
অবাক হয়
আকাশের কথার
ঢং ওর
মধ্যে পড়তে
শুরু করেছে
দেখে।
লতিকা মাসি
আকর্ণ হাসেন
পান-দোক্তার
চিত্রিত দাঁত
দেখিয়ে।
"বাবা!
খুব কথা
শিখেছিস তো!......
তা যাবি
না দাঁড়াবি
?"
"হ্যাঁ
হ্যাঁ মাসি
যাব.... তা
তুমি এদিকে
কোথায় এসেছিলে?"
"আর
বলিস না
চেতলায় এসেছিলাম।
বড়দার শরীরটা
হঠাৎ বড্ডো
খারাপ হয়েছিল
রে - তাই
দেখতে এসেছিলাম
"।
"কেন
মানবমামুর কি
হয়েছে?" পাখীর
গলায় উৎকন্ঠা
ঝরে পড়ে।
"ওই
এই বয়সে
অনিয়ম করলে
যা হয় ।
ফার্স্ট এ্যাটাক
হয়েছিল- চল
যেতে যেতে
কথা হবে”।
পাখীও যাবার
জন্য ঘুরে
দাঁড়ায়।
"হ্যাঁ
চলো....... বাপরে
মামুর হার্ট
এ্যাটাক হয়েছিল!
- তা তুমি
কিভাবে যাবে
মাসি?"
"কিভাবে
যাবো মানে?"
লতিকা
মাসির ঠোঁট
প্রশ্ন চিহ্নের
মত ঝুলে
পড়ে।
"না
বলছিলাম বালিগঞ্জ
হয়ে যাবে
না মেট্রো
হয়ে যাবে?"
"ও
তাই বল"।
মাসি আসস্থ
হন।
" তা
তুই কিভাবে
ফিরবি?" লতিকা
মাসি ধনেখালির
শাড়ির আঁচল
ঠিক করতে
করতে জিজ্ঞেস
করেন।
"আমি
মাসি মেট্রো
হয়ে ফিরবো।
বালিগঞ্জ থেকে
ট্র্র্রেনে উঠতে
বড্ডো প্রবলেম
হয়।"
"তালে
তো ভালই
হল রে -
আমারো
দমদম পর্যন্ত
রিটার্ন টিকিট
"।
"তবে
আর দেরি
না করে
শিগগির চলো,
মেট্রোর
টিকিট কাউন্টারে
লম্বা লাইন
পড়ে যাবে।
পাখী হঠাৎ
তাগদা দিতে
আরম্ভ করে।
আসলে
ও আর এক
মূহূর্ত এখানে
থাকতে চাইছিল
না।
একটা দলা
পাকান কান্না
আপ্রাণ চেষ্টা
চালাচ্ছিল বুকের
ভেতর থেকে
চোখের উপর
আছড়ে পড়তে।
পাতালে ঢোকার
আগে শেষ
বারের মত
বিষন্ন চোখে
তাকাল পাখী
বাইরের জগতের
দিকে।
সেই সময়
এক শালিখ
উড়ে গেল
ঝরা বিকেলের
রোদটুকু নিয়ে।
৪
ফরসা-সুশ্রী
মুখ পকেট
থেকে মোবাইল
বের করে
কি যেন
দেখল, "মেট্র্রো
ছয় মিনিট
হল এখানে
দাঁড়িয়ে আছে"।
" ছ
মি নি ট
!" আকাশের
চোখদুটো কপাল
ছাড়িয়ে ট্রেনের
ছাদে ঠেকতে
চাইল।
ট্রেনটা টানেলের
মধ্যে অনড়
হয়ে ছিল।
আকাশ এতক্ষণে
বুঝল কেন
পাখীকে এতবার
ট্রাই করে
পাচ্ছে না।
ইতস্ততঃ করে
দাঁড়ান ফরসা-সুশ্রী
মুখকে জিজ্ঞেস
করল, "আচ্ছা
আমরা কোন
জায়গায় দাঁড়িয়ে
আছি"?
"পার্ক
স্ট্রীট আর
এসপ্ল্যানেডের
মাঝামাঝি” উত্তর
দিল পাশে
বসা মোটাসোটা
গুঁফো, সঙ্গে
সঙ্গে আবার
যোগ করল,
"একটা
এ্যানাউন্সমেন্ট
পর্যন্ত নেই,
বুঝুন
কোন দেশে
আমরা বাস
করছি।"
বলেই চোখ
দুটো এমনভাবে
ঘোরাল যেন
এর পেছনে
এক গভীর
চক্রান্ত কাজ
করছে।
সামনে ঢাউস
কালো পিঠ-ব্যাগ
প্রাণপণে জাপটে
বসা শীর্ণ
মুখের উচ্চকন্ঠ-
“রেল
মন্ত্র্র্রী বা
কোন নেতাকে
দেখেছেন এই
ধজা মার্কা
মেট্র্রো রেলের
কামরায় চাপতে?
– ফলে যা
হবার তাইই
হচ্ছে”।
“আপনার
মত পাবলিকরাই
তো ভোট
দিয়ে এদের
নেতা করেছে
মশাই”।
কোনার দিক
থেকে গরম
মন্তব্য উড়ে
এল।
ব্যাস আগুনে
ঘি পড়ল।
শুরু হয়ে
গেল মেট্র্রো
উদ্ধার। কে
বলবে এরা
এতক্ষণ মমির
মত মৃতবৎ
পড়েছিল। আকাশ
ভীষণ অসহায়
বোধ করছিল।
নাকের
ডগায় নেমে
আসা চশমাটা
ঠিক করে
মুখ তুলতেই
সুশ্রী মুখের
সঙ্গে চোখাচোখি
হয়ে গেল,
"আপনি
বসুন"।
আকাশ উঠে
দাঁড়াল।
"না
না আপনি
বসুন। আমার
কোনো প্রবলেম
হচ্ছে না"।
সুশ্রীর কাঁধে
হাত রেখে
আকাশ মৃদু
হাসল। "আর
বসবো না।
যাই দেখি
গেটের দিকে
গিয়ে - যদি
চলে"।
ভিড় ঠেলে
গেটের দিকে
যেতেই আকাশের
কথাকে সায়
দিয়ে ট্রেনটা
নড়ে উঠে
ধীরে ধীরে
গড়াতে শুরু
করল। এসপ্ল্যানেডের
কাছাকাছি আসতেই
মোবাইলে নেটওয়র্ক
চলে এল।
কিন্তু বারবার
ট্রাই করলেও
পাখীর "আমার
পরান যাহা
চায়..... তুমি
তাই, তুমি
তাইগো" রিং
টোন টা
বেজেই যাচ্ছিল।
আকাশ বিরবির
করল, "দয়া
করে ফোনটা
ধরো পরানসখী"।
থিকথিকে
মাছির মত
ভিড়কে মাড়িয়ে
ট্রেনটা এসপ্ল্যানেডে
ঢুকল।
৫
টোকেন
হাতে নিয়ে
সিঁড়ি দিয়ে
নিচে নামতেই
লতিকা মাসি
হতভম্ব হয়ে
গেলেন। “একিরে
বাবা! এতো
দেখি লোকে
লোকারণ্য – কি
হলো বলতো
দেখি!”
পাখীও
শুরুতে হকচকিয়ে
গিয়েছিল। ভ্রুরু-টুরু
কুঁচকে মুখ
বেঁকিয়ে বলল,
“দেখে
তো মনে
হচ্ছে সিয়োর
লাইনে ঝাঁপ-কেস।”
“সেকিরে...
সুইসাইড?....
তালে তো
ঠিক হতে
এক ঘন্টার
মামলা।” লতিকা
মাসি বিষন্ন
মুখে রায়
দেন।
“সুইসাইড
নয়, ট্রেনের
যান্ত্রিক ত্রুটির
ঝামেলা।” পাশে
দাঁড়ান মাঝবয়েসি
ভদ্রলোক মন্তব্য
করলেন।
“আচ্ছা
কতক্ষণ হলো
হয়েছে?” পাখীর
গলায় ব্যাগ্রতার
পারদ ওঠানামা
করে।
“তা
বলতে পারবো
না। তবে
আমি মিনিট
পনেরো ধরে
এখানেই দাঁড়িয়ে
আছি।” গম্ভীর
মুখে কথা
গুলো বলেই
ভদ্রলোক ঘাড়
ঘুরিয়ে ট্রেনের
টাইম দেখতে
লাগলেন।
সামনে
একদল স্কুল
ফেরতা মেয়েরা
দুঃচিন্তা বিহীন
ভাবে নিজেদের
মধ্যে হাসাহাসি
করছিল। ঐ
দিকে তাকিয়ে
লতিকা মাসি
ভাবছিলেন এরা
পারেও বটে।
এমনসময় পাখীর
মোবাইলটা বেজে
উঠলো। স্ক্রীনে
আকাশের নামটা
দেখে পাখী
রাগে বিরবির
করল, “পাজিটার
এতক্ষণ পর
সময় হলো।”
কিন্তু ফোনে
আকাশের কথা
কিছুই বুঝতে
পারছিল না।
বড্ডো ক্যালর-ব্যালর
হচ্ছে। ‘এসপ্ল্যানেড’
.... ‘আছি’
এই শব্দ
দুটো কানে
যেতেই পাখী
ফোনটা কেটে
দিল। হঠাৎ
রাগে মাথার
ভেতরটা দপদপ
করে উঠল।
“আমাকে ঠায়
দাঁড় করিয়ে
রেখে বাবু
এসপ্ল্যানেডে
ফূর্তি করছেন।
অসভ্য – ছোটলোক
কোথাকারের – একটা
ফোন পর্যন্ত
করলোনা। নিজের
ইচ্ছে মতো
মোবাইল বন্ধ
রাখছে ।
যা খুশি
তাই –”
ভাবনায়
ছেদ পড়ল।
লতিকা মাসি
খুব বিরক্ত
হচ্ছিলেন, “কিরে
পাখী বোবা
হয়ে গেলিযে,
কার ফোন
তোর মায়ের?”
“না
না এক
বন্ধুর।” পাখী
ধরা পড়া
মুখ দ্রুত
সামলাতে চেষ্টা
করে। হঠাৎ
সবাই কে
চমকে দিয়ে
স্টেশনে এনাউন্সমেন্ট
হলো রবীন্দ্র
সরোবর ছেড়ে
ট্রেন আসছে।
সবাই যেন
এতে ওঠার
চেষ্টা না
করে – কারন
পেছনে পরপর
ট্রেন আছে।
লতিকা মাসি
কি যেন
একটা জানার
জন্য প্রশ্ন
করেছিলেন তা
এই ঘনঘন
এনাউন্সমেন্টে
চাপা পড়ে
গেল। গলা
তুলে চারদিক
দেখে পাখী
স্বর উঁচু
করল “মাসি
এটাতে উঠবো
না।”
“পাগোল
নাকি! এই
ভীড়ে উঠলে
আমি সিয়োর
দমবন্ধ হয়ে
মারা যাব।”
বলার ভঙ্গি
দেখে এই
অবস্থাতেও হাসি
পেল পাখীর।
ভীড় নাচিয়ে
দম্ভ ভরে
ট্রেন ঢুকলো
স্টেশনে, আওয়াজে
পাখী নিজের
মোবাইলের আবার
আর্তনাদ টের
পেলোনা। আর
পেলেও তাতে
কোন লাভ
হতো বলে
মনে হয়না।
লতিকা মাসি
আর পাখী
মন দিয়ে
ট্রেনে ওঠার
যুদ্ধ দেখছিল।
পাখীর মনে
হচ্ছিল যেন
এক টুকরো
গুড়ের উপর
একদঙ্গল পিঁপড়েদের
ওঠার লড়াই
।
“সর্বোনাশ
করলো রে
পাখী – এখন
বাড়ি যাব
কি করে?”
অবস্থা
দেখে মাসির
গলায় অসহয়তার
সুর কাঁপতে
থাকে। পাখীর
কাছে এই
দৃশ্য অচেনা
নয়। বাসন্তীদেবী
কলেজ থেকে
বাড়ি ফেরার
সময় মাঝেমধ্যে
তাকে এই
অবস্থায় পড়তে
হয়েছে। ট্রেনটা
চলে যেতেই
পাখী এবার
মোবাইল বাজার
আওয়াজ পেল।
স্ক্রীনে আবার
আকাশের নাম।
সঙ্গে সঙ্গে
কেটে দিল
পাখী। মাসিকে
আড়াল করে
অদ্ভুত কায়দায়
টাইপ করল,
“জাহান্নমে
যাও..... dont disturb me...”
ম্যাসেজটা
পাঠাতে না
পাঠাতেই লতিকা
মাসির প্রশ্ন,
“হ্যাঁ
রে পরের
ট্রেনে উঠতে
পারবো তো?”
“অতো
ঘাবড়িয়োনা মাসি
তোমাকে ঠিকমতো
নিয়ে গেলেই
তো হলো।”
পাখী আসস্থ
করে। আশ্চর্যজনক
ভাবে পরের
ট্রেনে পাখীরা
উঠতে পারলো।
এতে ভীড়
থাকলেও দমবন্ধকর
পরিস্থিতি ছিলনা।
রবীন্দ্রসদনে এসে
প্রতিবন্ধী সিটের
সামনে ভদ্রভাবে
দাঁড়াবার সুযোগ
পেল দুজনে।
লতিকামাসি বুকের
আঁচলটা বাঁ
হাতে কোনমতে
ঠিক করতে
বললেন “ভাগ্গিস
তুই ছিলি,
তা না
হলে ট্রেনে
উঠতে পারতাম
কিনা সন্দেহ।”
পাখী মৃদু
হেসে ঘাড়
নিচু করে
ম্যাসেজ-বক্স
খুলল। আকাশের
ম্যাসেজে ভর্তি।
সব কটাতেই
সরির বন্যা।
পাখী ডুবে
গেল ম্যাসেজের
ভিতর।
ময়দান
থেকে পার্ক
স্ট্রীটের ঢোকার
মুখে ট্রেনটা
হঠাৎ দাঁড়িয়ে
গেল। বিপরীত
দিক থেকে
ডাউনগামি ট্রেনটাও
দাঁড়াল কি
দাঁড়াল না
তা বোঝার
আগেই অন্যমনষ্ক
মাসির নজর
গেল বিপরীত
দিকের ট্রেন
থেকে কে
যেন উন্মাদের
মতো হাত
নাড়ছে ।
“দ্যাখ দ্যাখ
পাখী পাগোলের
কান্ড দ্যাখ।”
ডাউনগামি ট্রেনটা
বেড়িয়ে গেল।
সঙ্গে
সঙ্গে পাখীদের
ট্রেনটাও চলতে
শুরু করল।
পাখী মুখ
তুলল, “কিছু
বল্লে মাসি?”
“আরে
তুই তো
দেখলি না,
উল্টোদিকের
ট্রেন থেকে
একজন লোক
এইদিকে পাগোলের
মতো হাত
নাড়ছিল।” পাখী
পাথর হয়ে
গেল শুনে।
“তার
কি চোখে
চশমা ছিল?”
কোনমতে
প্রশ্নটা করলো।
“হ্যাঁ
ছিল ।
ক্যানো রে
তোর কি
চেনা কেউ?
” লতিকামাসির
ভ্রু আর
মুখ প্রশ্নটা
করলো।
“ওর
কাঁধে ব্রাউন
কালারের ব্যাগ
ছিল? ” উত্তরের
তোয়াক্কা না
করে দ্রুত
লিখলো পাখী..
“Pls ফিরে
এসো........”
কিন্তু
সেন্ড করতে
গিয়ে দেখল
টাওয়ার নেই।
পাখী অধীরভাবে
অপেক্ষা করতে
লাগলো টাওয়ারের
জন্য ।।
।।
সমাপ্ত ।।
(এই
গল্পের সব
চরিএ ই
কাল্পনিক।
শুধু একটা
মেয়েকে মেট্রো
স্টেশানে চিন্তিত
মুখে নখ খুঁটতে
দেখে এই
গল্পের প্লটটা
মাথায় আসে......)
Download and
install Avro Keyboard to view the contents.
Mail us to
phoenix.punoruday11@gmail.com
for pdf version of this Magazine.
Like our
Facebook Page- http://www.facebook.com/phoenix.punoruday
daaroon bhai... aare chaai..!!
ReplyDeletekhub bhalo laglo...
ReplyDelete