Saturday 28 September 2013

Seser Kotha


শেষের কথা

পাঠক পাঠিকাদের আমাদের এই পত্রিকা টি কেমন লাগছে তা লিখে জানান আপনাদের কাছে যদি নতুন কোন সাজেশন থেকে থাকে সেটাও আমাদের মেল আই.ডি -তে লিখে জানান আপনাদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য
কার্ত্তিক-পৌষ, ১৪২০ সংখ্যার জন্য আপনাদের লেখা কবিতা, গল্প, উপন্যাস, আঁকা ক্যামেরায় তোলা ছবি ইত্যাদি পাঠিয়ে দিন আগামী 0- অক্টোবর, ২০১৩ এর মধ্যে আমাদের মেল আই.ডি তে

আমাদের পরবর্তী সংখ্যা প্রকাশিত হবে আগামী দীপাবলি তে

আমাদের মেইল আই.ডি-

এছাড়া ষষ্ঠী দিন আমাদের পূজা বার্ষিকী, ১৪২০ প্রকাশিত হবে

বহু প্রবাসী বাঙ্গালী আমাদের এই ম্যাগাজিন ব্লগ এর মাধ্যমে পড়ছেন এবং পাঠকের সংখ্যা ছয় হাজার ছাড়িয়ে গেছে আপনারাও আমাদের এই ব্লগ ফেসবুক, টুইটার গুগল+ এর মাধ্যমে শেয়ার করতে পারেন
আমাদের ব্লগ এর লিঙ্ক টা হল-

আমাদের ফেসবুক পেজ-





Download and install Avro Keyboard to view the contents.
Mail us to phoenix.punoruday11@gmail.com for pdf version of this Magazine.

Mogoj Mitar by Tanmoy Banerjee


সবজান্তা (QUIZ)
তন্ময় ব্যানার্জী


আমাদের ফিনিক্স পুনরুদয় আজ দেখতে দেখতে এর দশম প্রকাশ করে ফেললো। এবং বলা বাহুল্য আমরা তৃতীয় বছরে পদার্পণ করলাম। এবং এই দুই বছর সময়আমরা একসাথে মিলে এতদূর এগিয়ে এসেছি। তাই এই সংখ্যার কুইজ এর বিষয় রাখা হল সময়
. হামিংবার্ড সেকেন্ড এ কতবার ডানা ঝাপটায়?
. একটি নেংটি ইঁদুর এর হৃদস্পন্দন সেকেন্ড এ কতবার হয়?
. একটি বুলেট ট্রেন ১ কি.মি. পথ কতক্ষণে যায়?
. চাঁদের আলো পৃথিবী তে আসতে কত সময় লাগে?
. সর্বপ্রথম পেন্ডুলাম ঘড়ি কত সালে তৈরি হয়?


গত সংখ্যার (বৈশাখ-আষাঢ়, ১৪২০) কুইজ-এর উত্তরঃ
. পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য ফল কি? কাঁঠাল
. আচার্য জগদীশ চন্দ্র বোস কত সালে বি এ পাশ করেন? ১৯৭৮
. ভোলগা থেকে গঙ্গা উপন্যাসটি কে রচনা করেন? রাহুল সংকৃত্যায়ন
. পশমিনা কি? শাল
. দি সং অফ ইন্ডিয়া কার লেখা? সরোজিনী নাইডু


কুইজের উত্তর আগামী ২০-এ অক্টোবর, ২০১৩ তারিখের মধ্যে আমাদের মেল আই.ডি. phoenix.punoruday11@gmail.comতে পাঠিয়ে দিন



Download and install Avro Keyboard to view the contents.
Mail us to phoenix.punoruday11@gmail.com for pdf version of this Magazine.

Rannaghor by Suvra Sasmal


ইলিশ কাবাব
শুভ্রা শাসমল (সাহা)

 
উপকরণ:
 
ইলিশ মাছ- ২টি, আলু- মাঝারি আকারের ২টি, টোস্টের গুঁড়ো- ১ কাপ, পেঁয়াজ- বেরেস্তা আধাকাপ, টমেটো সস- এক কাপ, পনির গুঁড়ো- আধা কাপ, লেমন রাইন্ড- ১ চা চামচ, লেবুর রস- ২ টেবিল চামচ, সিরকা- ১ টেবিল চামচ, কাঁচামরিচ বাটা- ১ চা চামচ, সাদা গোলমরিচ গুঁড়ো- ১ চা চামচ, সোয়াবিন তেল- ২ টেবিল চামচ, লবণ- পরিমাণ মতো, মাখন- ৪ টেবিল চামচ
 
প্রণালি:
 
ইলিশ মাছের আঁশ ছাড়িয়ে পেটের ও মাথার ময়লা পরিষ্কার করে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবেমাথার সঙ্গে মাছের কাঁটা রেখে ছুরি দিয়ে দুই পিঠের মাছ সাবধানে তুলে নিতে হবে, যেন মাছের কাঁটা না কাটেকাঁটাসহ মাছের মাথা বড় হাঁড়িতে নিয়ে লবণ, সিরকা ও অল্প জল দিয়ে সেদ্ধ করে জল শুকিয়ে গেলে নামাতে হবেঅল্প জল, লেবুর রস ও লবণ দিয়ে মাছ সেদ্ধ করে কাঁটা বেছে ২ টেবিল চামচ মাখন দিয়ে ভাজতে হবেআলু সেদ্ধ করে চটকিয়ে ২ টেবিল চামচ মাখন দিয়ে ভাজতে হবে২ টেবিল চামচ তেল গরম করে টোস্টের গুঁড়ো অল্প ভেজে নিতে হবে টেবিল চামচ বেরেস্তা গুঁড়ো করে টোস্টের গুঁড়োর সঙ্গে মেলাতে হবেএবার মাছের কিমা, সেদ্ধ আলু, বাকি বেরেস্তা, কাঁচামরিচ বাটা, গোলমরিচ গুঁড়ো, পেঁয়াজ, বেরেস্তা, লেমন রাইন্ড, ১ টেবিল চামচ টমেটো সস, পনির গুঁড়ো, লবণ এবং ৩ টেবিল চামচ টোস্টের গুঁড়ো এক সঙ্গে মাখাতে হবেবেকিং ট্রেতে ফয়েল সিট বিছিয়ে কাঁটাসহ মাছের মাথা ফয়েল সিটের ওপর রাখতে হবেপরে মাছের মিশ্রণ কাঁটার ওপর ইলিশ মাছের আকারে চেপে চেপে বসিয়ে টোস্টের গুঁড়ো ছিটিয়ে দিতে হবেসাবধানে উল্টিয়ে মাছের পিঠে ও মাছের মিশ্রণে চেপে চেপে বসাতে হবেমাছের গায়ে টমেটো সস লাগিয়ে টোস্টের গুঁড়ো দিয়ে সমান করে চেপে দিনএরপর চামচ দিয়ে মাছের ওপর আঁশের মতো দাগ কেটে প্রিহিটেড ওভেনে ১৮০০ সে. তাপে ২৫-৩০ মিনিট বেক করতে হবেএই ইলিশ কাবাব আপনারা পোলাও, ভুনা খিচুড়ি, পরোটা অথবা সালাডের সঙ্গে পরিবেশন করা যায়

 
 
জামের শরবত

উপকরণ :
 
পাক জাম ২ কাপ, চিনি কোয়ার্টার কাপ, ঠান্ডা পানি ২ কাপ, লেবুর রস ১ টেবিল চামচ
প্রণালী :
 
জাম ধুয়ে চটকে রস বের করুনরস মিহি কাপড়ে ছেঁকে নিনজামের রসে পানি, চিনি, লেবুর রস ও বরফকুচি মিশিযে পরিবেশন করুন

 
 
কাঁচাআমে বাতাসি চচ্চড়ি

উপকরণ :
 
মাছ ২৫০ গ্রাম, আদা বাটা সিকি চা চামচ, হলুদ গুঁড়া এক চা চামচের তিন ভাগের এক ভাগ, রসুন বাটা আধা চা চামচ, পেঁয়াজ কুচি সিকি কাপ, কাঁচামরিচ কুচি ৭/৮টা, ধনেপাতা কুচি, তেল, লবণ পরিমাণমতো, কাঁচা আম ছোট একটি ফালি করে কাটা
প্রণালী :
 
মাছে সব মসলা মেখে অল্প পানি দিয়ে বসিয়ে ঢেকে দিতে হবেমাছ তেলের ওপর উঠলে নামিয়ে ধনেপাতার কুচি ছড়িয়ে দিতে হবে


Download and install Avro Keyboard to view the contents.
Mail us to phoenix.punoruday11@gmail.com for pdf version of this Magazine.


Suswasthyo by Arup Acharya


ব্যাথা থেকে বাঁচতে হলে
অরূপ আচার্য্য

 
যুগ বদলেছে, আমরা উন্নত হয়েছি, তার সাথে বেড়েছে আমাদের রোগ যন্ত্রণাপ্রায় প্রতিদিন ই কোনও না কোনও নতুন রোগের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছেএর মধ্যে সবচেয়ে প্রচলিত হল দেহের বিভিন্ন জয়েন্ট-এ ব্যাথা হওয়াএর জন্য আমরা মুঠো মুঠো ওষুধ (Pain Killer) খাই তবে কিছু সাধারণ নিয়ম কানুন মেনে চললে আমরা এই ধরনের ব্যাথা কে খুব সহজেই নিয়ন্ত্রন করতে পারি
 
 
কোমর ব্যাথা রোগীর জন্য উপদেশ
 
ব্যাথা না কমা পর্যন্ত বিছানায় শুয়ে থাকবেন।
মেরুদণ্ড বাঁকা করে কোনও কাজ করবেন না।
ব্যাথা কমে যাবার পর যে কোন একদিকে কাত হয়ে শুয়ে থেকে উঠবেন।
পিড়া, মোড়া ইত্যাদিতে বসা নিষেধ।
চেয়ার টেবিলে বসে ভাত খেতে হবে।
টিউবওয়েল চেপে জল ওঠাবেন না।
ফোম বা নরম বিছানায় শোয়া নিষেধ।
দাঁড়িয়ে রান্না করবেন।
অনেকক্ষণ একই আসনে বসবেন না, মাঝে মধ্যে দাঁড়িয়ে ঘোরাফেরা করবেন।
চেয়ারে বসার সময় এক উরুর উপর আরেক উরু আড়াআড়ি করে বসবেন।
বসার সময় হাঁটুর লেভেল মাজা/কোমরের উপর থাকবে।
উপুড় হয়ে শোবেন না।
ঝর্ণায় বা শাওয়ারে অথবা সোজা হয়ে বসে স্নান করবেন।
কোন জিনিস তোলার সময় সজা হয়ে বসে তুলবেন।
ব্যাথা থাকা অবস্থায় কোন প্রকার ব্যায়াম করবেন না, ব্যাথা কমলে অবশ্যই ব্যায়াম করবেন।
ভারী শরীরের ওজন কমাতে হবে।
সিঁড়িতে ওঠার সময় ধীরে ধীরে উঠবেন যাতে মেরুদণ্ড বাঁকা না হয়।
মালিশ নিষেধ।

 
গেঁটে বাত রোগীদের মানাঃ
 
মদ্যপ জাতীয় পানীয়, বড় মাছ, বড় মাংস, মোচা, থোড়, এঁচোড়, পালং ও পুঁইশাক, টমাটো, ঘন ডাল, কালো জাম, ছানা, দই, ওল খাবেন না।
প্রচুর জল খাবেন।

 
হাঁটু ব্যথা রোগীর জন্য উপদেশঃ
 
হাঁটুর ব্যায়াম প্রতি ঘণ্টায় ৫ মিনিট করে করবেন।
হাঁটু ভাঁজ করা নিষেধ।
কমোড ব্যবহার করুন।
ঝর্ণায় বা শাওয়ারে অথবা সোজা হয়ে বসে স্নান করবেন।
চেয়ার টেবিলে বসে ভাত খেতে হবে।
পিড়া, মোড়া ইত্যাদি ও মেঝেতে বসা নিষেধ।
মালিশ নিষেধ।

 
ঘাড়ে ব্যাথা রোগীর জন্য উপদেশঃ
 
ঘাড় সোজা রেখে সকল কাজ করবেন।
যে কোন একদিকে কাত হয়ে শুয়ে থেকে উঠবেন।
ব্যাথা থাকা অবস্থায় কোন প্রকার ব্যায়াম করবেন না, ব্যাথা কমলে অবশ্যই ব্যায়াম করবেন।
যানবাহন চড়ার সময় সামনের আসনে বসবেন।
দাঁঝর্ণায় বা শাওয়ারে অথবা সোজা হয়ে বসে স্নান করবেন।
ড়িয়ে রান্না করবেন।
টিউবওয়েল চেপে জল উঠাবেন না।
মালিশ নিষেধ।
শক্ত বিছানায় ও বালিশ ছাড়া শোবেন।

 
কাঁধের ব্যাথা (ফ্রোজেন সোল্ডার)রোগীর জন্য উপদেশঃ
 
ক্ষতিগ্রস্থ হাতটি সম্পূর্ণ বিশ্রামে রাখতে হবে এবং ঐ হাতে কোন ভারী কাজ করা যাবে না।
নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে।
ডাক্তারবাবুর পরামর্শ নিয়ে ফিজিওথেরাপি করাবেন।
প্রয়োজনে গরম সেঁক দেওয়া যেতে পারে।
ইঞ্জেক্সান দেওয়ার ব্যাপারে ডাক্তারবাবুর কাছে পরামর্শ করবেন।

 
পায়ের তলার (হিল পেন)ব্যাথার জন্য উপদেশঃ
 
পা-টিকে বিশ্রামে রাখতে হবে।
প্রয়োজনে পায়ের তলায় বরফের সেঁক নিতে হবে।
পায়ের পেশীগুলির স্ট্রেচিং ব্যায়াম করাতে হবে ও পা-টিকে বালিশের ওপর তুলে রাখতে হবে।
খালি পায়ে হাঁটা নিষেধ।
ভারী শরীরের ওজন কমাতে হবে।
ডাক্তারবাবুর পরামর্শ নিয়ে ফিজিওথেরাপি করাবেন।
ডাক্তারবাবুর পরামর্শ নিয়ে ঔষধ খবেন।
নরম জুতো ব্যাবহার করবেন।
হিল দেওয়া জুতো ব্যাবহার করবেন না।

 
অস্টিওপোরোসিস রোগীদের জন্য উপদেশঃ
 
সামনের দিকে ঝুকে ভারী জিনিস তোলা বা সাধারণভাবে ভারী জিনিস তোলা নিষেধ।
সঠিক জুতো পরবেন(রবার হিল বা কুশান সোল থাকবে,উঁচু হিল পরবেন না)।
চলাফেরার জন্য লাঠি (কাঠের বা অ্যালুমিনিয়ামের) ব্যাবহার করবেন।
ব্যায়াম(যেমন হাঁটাচলা, সাইকেল চালানো)করবেন।
ডাক্তারবাবুর দেওয়া সঠিক ঔষধ খবেন।
পুষ্টিকর খাওয়ার তথা বেশি ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার (দুধ,টকদই,ফল,সোয়াবিন) খাবেন।
নিয়মিত ডাক্তারবাবুর পরামর্শ নেবেন ও বি.এম.ডি টেস্ট করান।

 
টেনিস এলবো রোগীদের জন্য উপদেশঃ
 
ক্ষতিগ্রস্থ হাতটিকে সম্পূর্ণ বিশ্রামে রাখতে হবে।
কাপড় নিঙড়ানো,ক্ষুন্তি নাড়া জাতীয় কাজকর্ম সম্পূর্ণ বন্ধ রাখতে হবে।
কোন ব্যায়াম করার প্রয়োজন নেই।
ডাক্তারবাবুর পরামর্শ নিয়ে ফিজিওথেরাপি করাবেন।
কোন প্রকার মালিশ বা ম্যাসাজ করাবেন না।


Download and install Avro Keyboard to view the contents.
Mail us to phoenix.punoruday11@gmail.com for pdf version of this Magazine.



Camera r Chokhe
















Download and install Avro Keyboard to view the contents.
Mail us to phoenix.punoruday11@gmail.com for pdf version of this Magazine.

Subhramonium by Rupankar


শুভ্রামোনিয়াম
রূপঙ্কর সরকার




-আরে, আপনি সাউথ ইন্ডিয়ান?” নতুন ম্যানেজার জিজ্ঞেস করলেন। অবশ্য কলকাতায় সাউথ ইন্ডিয়ান প্রচুর, সব অফিসেই কয়েক জনকে পাওয়া যায়। তা বাংলা তো ভালই বলেন, বহুদিন আছেন নিশ্চয়।
জলের গ্লাসটা একটু বাড়িয়ে দিয়ে দিদি বললেন-না স্যার, আমি বাঙালি, বাঙাল। আমার পদবী গোস্বামী।
স্যার অবশ্য জলের গ্লাসটা নিলেন না। আসলে কেউই বড় একটা নেয়না। অফিসের দেয়ালে ওয়াটার পিউরিফায়ার লাগানো আছে, কুলারও আছে। প্রত্যেকের টেবিলে পেট বোতল আছে নিজস্ব। যে যার জল ধরে আনে ইচ্ছে মত। দিদি তবু একটা হাতল লাগানো কেরিয়ারে ছখানা গ্লাসে জল ভরে টেবিলে টেবিলে ঘোরান, ওটাই তাঁর চাকরি। জিজ্ঞেস করলে বলেন- আমি ওয়াটার বয়
সবাই তো সমান নয়, নতুন কয়েকটা ফক্কড় ছোকরা, শুধু ছোকরা কেন, এক ছুঁড়িও আছে তাদের দলে, তারা বলে ও দিদি, আপনি বয় কী করে হবেন, ওয়াটার গার্ল হতে পারেন বড়জোর। যদিও গার্ল হবার বয়সও পেরিয়ে গেছে। আপনি আমাদের ওয়াটার লেডি।
অফিসে একজন বড়বাবু আছেন। আছেন মানে, ইনিই শেষ। সাইবার যুগে খাতা পেন্সিল হাতে বড়বাবু টাবু আর চলেনা। ইনি রিটায়ার করলে পদটাও আর থাকবেনা। তবু যতদিন আছেন... তা এই বড়বাবু একদিন রুখে দাঁড়ালেন-
বলি ও ছোটসাহেব, শুভ্রা কী করে ওয়াটার বয়, তাই তো? ক্রিকেট খেলা দেখেন নাকি? আজকাল মেয়েরাও ক্রিকেট খেলে জানেন তো ? ব্যাটসম্যান কে তো এখন কায়দা করে ব্যাটারবলা হয় কিন্তু থার্ডম্যান পোজিশনে যে মেয়েটি ফিল্ডিং করছে, তাকে কী বলে আপনারা? হেঁ হেঁ হেঁ...
শুভ্রাদি খুব কৃতজ্ঞ বড়বাবুর কাছে। উনিই কেবল সহমর্মীটিফিনে বেরিয়ে দু খিলি পানই কিনে আনলেন বড়বাবুর জন্য। প্রাচীন পোস্টে আসীন প্রাচীন মানুষটার নেশাও প্রাচীন। এদিকে শুভ্রামোনিয়ামনামটা অফিসে চালু করার পেছনে যে এনারই হাত ছিল বাইশ বছর আগে, তাও শুভ্রাদির অজানা নয়, কিন্তু... যাক সে সব কথা। নামটাও কেমন গা সওয়া হয়ে গেছে। বড়রা তো বটেই, নতুন ছেলেগুলোও ডাকে, ‘ও শুভ্রামোনিয়াম দি...
ম্যানেজারবাবু বললেন- !! তাহলে আপনি বাঙালি, আবার বাঙাল? আমি কিন্তু খাস ঘটি, দর্জিপাড়ার ছেলেতা সে যাকগে, আপনাকে সুব্রাহ্মণিয়ম বলে ডাকে কেন সবাই? অবশ্য আপনার পার্সোনাল ব্যাপার জানার আমার খুব একটা ইচ্ছে নেই। তবে আপনি জল হাতে ঘুরে বেড়ান কেন সারাদিন? সবাই তো নিজের নিজের বট্‌ল থেকে জল খায়। ওসব সার্বজনীন গ্লাস থেকে ভদ্রলোকে জল খায় নাকি আজকাল? না, এতো চলবেনা, মাইনে নিচ্ছেন যখন কাজ তো করতে হবে। কাল থেকে আপনি ডেটা কার্ডগুলো গুছিয়ে রাখবেন। প্রথমে এই দিয়ে শুরু করুন, এর পরে ইনডেক্সিংও করতে হবে। কতদূর পড়াশোনা আপনার ?”
বড়বাবু ঘরে ঢুকে বললেন, “নোস্কার স্যার, আমি নবীন নস্কর, বড়বাবু।
স্যার বললেন- এখানে তো সবই উল্টো দেখছি। বাঙালি মহিলার নাম সুব্রাহ্মণিয়ম, প্রবীন ব্যক্তির নাম নবীন, হ্যাঁ, তা কী মনে করে?”
বড়বাবু বললেন- আমি শুধু বড়বাবু না, এখানকার স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট। স্যার শুভ্রা তো জল দেওয়া ছাড়া কিছু করবে না। ওর তো ওটাই ডেসিগনেশন।
স্যার বললেন- তাই? আচ্ছা, মণিপুর জায়গাটা কেমন?”
বড়বাবু বললেন- জানিনা স্যার কোনওদিন যাইনি
স্যার বললেন- এবার যাবেন। আর বোধহয় বছর দুয়েক চাকরি আছে, না? তা ওখান থেকেই রিটায়ার করবেন। শুনুন মিস্টার প্রবীন নস্কর...
বড়বাবু বললেন- নবীন স্যার।
হ্যাঁ, মিস্টার নস্কর, অ্যাসোসিয়েশন ফন এখন আর চলছেনা, জানেন। তিন রকম পোলিটিকাল পার্টি ঢোকানো হয়েছে। আপনারা আমায় ঘেরাও করলে, অন্য একটা দলকে লেলিয়ে দেব। ক্লিয়ার? যান, আপনার যাত্রা শুভ হোক। আপনাকে প্লেনে যাবার পারমিশন করে দিচ্ছি।
নেপালি ছেলেটার নাম রাই। কম কথা বলে, ও বলল- দিদি, এই কার্ডগুলো নম্বর মিলিয়ে মিলিয়ে একটা করে সেট বানান। হয়ে গেলে বলবেন, আমি চেক করে দেব।
শুভ্রা গোস্বামী ম্যানেজারের ঘরে চলে গেলেন। স্যার, আমি তো এসব কাজ কোনওদিন করিনি। স্যার খুব ব্যাস্ত ছিলেন, বললেন- অন্নপ্রাশনের আগে ভাতও তো খাননি কোনওদিন। সব অভ্যাস হয়ে যাবে মিস সুব্রাহ্মণিয়ম। মিস না মিসেস? ওকি, কান্নাকাটির কী হল, ঠিক আছে, এখন যান। আজকে নাহয় জলের গ্লাস নিয়েই ঘুরুন, কিন্তু ডেটা কার্ড আপনাকে সামলাতেই হবে। না পারলে বলবেন, প্রচূর বেকার ছেলেমেয়ে ঘুরছে বাজারে
রাই বলল- দিদি, আপনি ভয় পাবেন না, আমি প্রথম প্রথম আপনাকে হেল্প করে দেব। কিন্তু আস্তে আস্তে আপনাকে কাজটা তো ধরতে হবে। আপনি নিশ্চয় ইংলিশ লিখতে পড়তে পারেনআচ্ছা আপনাকে সবাই সুব্রাহ্মণিয়ম বলে ডাকে কেন?”
শুভ্রা বললেন- আমরা বাঙালি, বাঙাল, ব্রাহ্মণ, গোস্বামী পদবী। আমার বাবা পূব বাংলা থেকে পালিয়ে এসে কোনও চাকরি বাকরি পাচ্ছিল না। এখানে ওয়াটার বয় হিসেবে ঢুকিয়ে দিলেন একজন আমাদের গ্রামের লোক। বাবা মারা যেতে সেই পদে আমি ঢুকলাম। বাবা অনেকদূর পড়েছিল কিন্তু আমি হায়ার সেকেন্ডারি। আমার মা আর এপারে আসতে পারেনি ওপারেই দাঙ্গায়...
রাই বলল- স্টপ ইট, ভাল লাগছেনা। আমি যতদিন পারি আপনার কাজ করে দেব। কিন্তু সুব্রাহ্মণিয়মের গল্পটা বললেন না...
বড়সাহেব বললেন, “রাই, তোমার অ্যাসিস্ট্যান্ট কেমন কাজ শিখছেন? একটু ধরে ধরে শেখাও, কয়েক দিনেই শিখে যাবেন
রাই বলল- স্যার, উনি স্কুল লেভেল পাশ করেছেন কিন্তু অনেকদিন পড়াশোনা অভ্যাস নেই...
স্যার বললেন- অভ্যাস কারও থাকেনা ভাই, ওটা করতে হয়। আসলে আমরা যে সব কাজ করি, একটু কম্পিউটার হ্যান্ডল করা বাদ দিলে বাকি কাজগুলোয় স্কুল লেভেলের বেশি বিদ্যে লাগেনা। কেন যে এরা কাঁড়ি কাঁড়ি ডিগ্রী চায়... যাকগে, কই তাঁকে ত দেখছি না, মিস সুব্রাহ্মণিয়ম?”
রাই বলল- তিনি তো সেদিনের পর থেকে আর আসেননি স্যার।
ম্যানেজার বললেন- সে কী!! ছুটির দরখাস্ত দিয়েছেন?”
বস্তির ছেলেগুলো এমনিতে মালমূল খায়, অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে, কিন্তু সেদিন খুব ধকল গেল সবার। থানায় ছোটাছুটি, পোস্ট মর্টেম করানো, সেখানে আবার মোটা ঘুষ ছাড়া বডি দেয়না। যতই বলল, এর তিনকুলে কেউ নেইআমরা তো পাশের বস্তিতে থাকি, গরীব মানুষ, তাও ছাড়লনা। বলে সুইসাইড কেসে রেট বেশি।
আন্না পিসি আঁচলের খুঁট দিয়ে বার বার চোখ মোছে আর বলে- মেয়েটা অত বিদুষী হয়েও সেই যে পিতিজ্ঞে করেছেল, কোনওদিন পড়াশোনার কাজ করবেনে...
বাবুর মা বলল- কেন গো দিদি?”
আন্না পিসি বলে- ওর বাবা, সেই পাকিস্তান থেকে নিজের বৌকে বাঁচিয়ে আনতে না পারলে কী হবে হারমোনিয়ামটা প্রাণ দিয়ে আগলে এনেছিল। কি মিষ্টি গলা ছেল গোঁসাই ঠাকুরের। মেয়েটাও তো ভালই গাইত, কিন্তু বাপ বলে তোর গান হচ্ছেনে, তোর সুর বসেনে ঠিকমত, তোর তো গানের চেয়ে পড়ার দিকে ঝোঁক বেশি। আমার হারমোনির হেপাজত কে করবে গো। তা মেয়ে রেগে মেগে পিতিজ্ঞে করল, আমি সারাদিন এই হারমোনিতে গলা সাধব আজীবন। বই কাগজে হাত দোবোনি প্রাণ থাকতে। তাই তো লোকে ক্ষেপাত ওকে শুভ্রামোনিয়ামবলে। সত্যি মিথ্যে জানিনা ভাই, কে যেন বলছিল, ওর আপিশে নাকি ওকে লেখাপড়ার কাজ করতে দিয়েছিল.. এখন হারমোনিটারকী হবে?”