Monday 15 April 2013

Ses Pata


শেষ পাতা


পাঠক পাঠিকাদের আমাদের এই পত্রিকা টি কেমন লাগছে তা লিখে জানান। আপনাদের কাছে যদি নতুন কোন সাজেশন থেকে থাকে সেটাও আমাদের মেল আই.ডি -তে লিখে জানান। আপনাদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য।

শ্রাবণ—আশ্বিন, ১৪২০ সংখ্যার জন্য আপনাদের লেখা কবিতা, গল্প, উপন্যাস, আঁকা ও ক্যামেরায় তোলা ছবি ইত্যাদি পাঠিয়ে দিন আগামী ৩0- এ জুন, ২০১৩ এর মধ্যে আমাদের মেল আই.ডি তে পাঠিয়ে দিন।

আমাদের পরবর্তী সংখ্যা প্রকাশিত হবে আগামী শ্রাবণ, ১৪২০ তে
(ইং- জুলাই, ২০১৩)
আমাদের মেইল আই.ডি-

বহু প্রবাসী বাঙ্গালী আমাদের এই ম্যাগাজিন ব্লগ এর মাধ্যমে পড়ছেন। এবং পাঠকের সংখ্যা পাঁচ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। আপনারাও আমাদের এই ব্লগ ফেসবুক, টুইটার ও গুগল+ এর মাধ্যমে শেয়ার করতে পারেন। 
 
আমাদের ব্লগ এর লিঙ্ক -

আমাদের ফেসবুক পেজ -





Download and install Avro Keyboard to view the contents.
Mail us to phoenix.punoruday11@gmail.com for pdf version of this Magazine.

Mogoj Mitaar


সবজান্তা (QUIZ)
তন্ময় ব্যানার্জী



১) পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য ফল কি?
২) আচার্য জগদীশ চন্দ্র বোস কত সালে বি এ পাশ করেন?
৩) ভোলগা থেকে গঙ্গা উপন্যাসটি কে রচনা করেন?
৪) পশমিনা কি??
৫) দি সং অফ ইন্ডিয়া কার লেখা?



গত সংখ্যার (মাঘ-চৈত্র, ১৪১৯) কুইজ এর উত্তরঃ
১) গীতিকার হিসেবে গুলজারের প্রথম সিনেমার নাম কি ?
বন্দিনী
২) জামাইকার রাজধানীর নাম কি?
কিংস্টন
৩) সিমপ্লন পাস দ্বারা কোন দুই দেশ যুক্ত?
সুইজারল্যান্ড ও ইতালি
৪) কনুই-এ যে আস্থিগুলি একসাথে যুক্ত তাদের নাম কি?
রেডিয়াস, আলনা ও হিউমেরাস
৫) কলকাতায় “ত্রৈলোক্য মহারাজ রোড” কি নামে পরিচিত?
ব্রাবোর্ণ রোড


কুইজের উত্তর আগামী ৩০- এ জুন, ২০১৩ তারিখের মধ্যে আমাদের মেল আই.ডি. phoenix.punoruday11@gmail.com –তে
পাঠিয়ে দিন।



Download and install Avro Keyboard to view the contents.
Mail us to phoenix.punoruday11@gmail.com for pdf version of this Magazine.

Rannaghor by Suvra Sasmal


গ্রীষ্মকালের ঠাণ্ডা
শুভ্রা শাসমল (সাহা)


তরমুজের ঠান্ডা
উপকরণ:
তরমুজ কুচি ৪ কাপ, বরফ কুচি হাফ কাপ, চিনি হাফ কাপ
প্রণালি:
তরমুজ কুচি ও চিনি একসঙ্গে মিশিয়ে ২ ঘণ্টা রেফ্রিজারেটরে রেখে দিতে হবেপরে বরফ কুচি দিয়ে পরিবেশন করুনইচ্ছা করলে জাফরান ও গোলাপজল মেশানো যায়


কাঁচা আমের লাচ্ছি
উপকরণ:
আম ১ কাপ, কমলার রস হাফ কাপ, চিনি কোয়ার্টার কাপ, টক দই ২ টেবিল চামচ, বরফ কুচি কয়েক টুকরো, গোলাপ ফুলের পাপড়ী ৪/৫ টা, মধু ২ চামচ
প্রণালী:
কাঁচা আম ছিলে পরিস্কার করে ধুয়ে কিউব করে কেটে নিতে হবেএই আমের কিউব গুলোকে ব্লেন্ডারে অল্প জল দিয়ে কিছুক্ষন ব্লেন্ড করুনএবার বরফ কুচি, চিনি, টক দই, কমলার রস ও মধু মিশিয়ে আরো কিছুক্ষন ব্লেন্ড করুনগ্লাসে এই ব্লেন্ড টা ঢেলে নিয়ে কিছুটা গোলাপের পাপড়ী ছিটিয়ে পরিবেশন করুন


দই ইলিশ
শুভ্রা শাসমল (সাহা)


উপকরণ :
ইলিশ- ১টা, সোয়াবিন তেল- হাফ কাপ, পেঁয়াজ বাটা- হাফ কাপ, পেঁয়াজ কুচি- হাফ কাপ, হলুদ বাটা- ২ চা চামচ, মরিচ বাটা- ২ চা চামচ, ধনে বাটা- ২ চা চামচ, ভাজা মসলা- হাফ চা চামচ, আদার পাউডার- হাফ চা চামচ, লবণ- পরিমাণ মত
 
প্রণালী :
ইলিশ মাছের বড় টুকরো করে কেটে নিতে হবেকড়াইয়ে তেল গরম করে পেঁয়াজ কুচি দিতে হবেপেঁয়াজ একটু ভাজা হয়ে গেলে ওর মধ্যে সব মসলা ও পেঁয়াজ বাটা দিয়ে কষিয়ে নিনঅল্প জল দিয়ে মাছের টুকরোগুলো বিছিয়ে দিনকিছুক্ষণ কষিয়ে ১ কাপ জল ও লবণ দিয়ে ঢেকে মৃদু আঁচে ৫ মিনিট রান্না করুনতারপর দই দিয়ে প্রায় ৩০ মিনিট মৃদু আঁচে রান্না করতে হবেমাঝখানে ঢাকনা খুলে মাছ উল্টিয়ে কাঁচামরিচ দিয়ে ঢেকে দিনটক দই হলে সামান্য চিনি দিয়ে দিনমৃদু আঁচে রেখে ভুনা করে উনুন থেকে নামান ও পরিবেশন করুন


Download and install Avro Keyboard to view the contents.
Mail us to phoenix.punoruday11@gmail.com for pdf version of this Magazine.

Probondho: Rabindranath by Premananda Ghosh


শতবর্ষের আলোয়

রবীন্দ্রনাথের নোবেল পুরস্কার বিজয়ের কাহিনী

---- ফিরে দেখা (শেষ ভাগ)

প্রেমানন্দ ঘোষ







*সুইডিশ একাডেমীর সম্মুখে কবির দেওয়া লিখিত ভাষণের অনুবাদ (২৬ শে মে ১৯২১ সাল)

আমি আনন্দিত যে অবশেষে আমি আপনাদের দেশে আসতে পেরেছি, আপনারা আমার কাজের স্বীকৃতি হিসেবে নোবেল পুরস্কার দিয়ে আমাকে যে সম্মান দিয়েছেন এই সুযোগে আমি আপনাদের সেজন্য কৃতঞ্জতা জানাচ্ছি

আমার মনে আছে সেদিন বিকালে আমার ইংল্যান্ডের প্রকাশকের প্রেরিত তারবার্তায় জানতে পারলাম আমাকে পুরষ্কার দেওয়া হয়েছেআপনারা হয়ত জানেন আমি শান্তিনিকেতনের স্কুলে বসবাস করছিলাম তখনসেই সময় বিদ্যালয়ের নিকটে একটি বনে একত্রিত হয়ে একটি অনুষ্ঠান করছিলামযখন আমি ডাক ও তার বিভাগের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলাম, একজন কর্মী তারবার্তাটি নিয়ে দৌড়ে আমাদের কাছে এলআমাদের সঙ্গে একই গাড়িতে একজন ইংরেজ অতিথি ছিলেনবার্তাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নয় মনে করে সেটি পকেটে রেখে দিয়েছিলাম, গন্তব্যস্থলে পৌঁছে নিশ্চিন্তে পড়া যাবে এই চিন্তা করেকিন্তু আমার অতিথি সম্ভবত তারবার্তার বিষয়টি জানতেনতাই সেটি পড়ার জন্য তিনি পীড়াপীড়ি করতে লাগলেন এই বলে যে এর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ আছেআমি বার্তাটি খুলে পড়তে শুরু করলাম; কিন্তু বিশ্বাস করতে পারলাম নাপ্রথমে ভাবলাম তারবার্তার ভাষা সঠিক নয়, এবং এই বক্তব্যের হয়ত আমি ভুল অর্থ করছি কিন্তু অবশেষে আমি নিশ্চিত হলামআপনারা সম্যকরূপে বুঝতে পারছেন এই খবর আমার বিদ্যালয়ের ছেলেদের ও শিক্ষকদের কাছে কত না আনন্দের বিষয়যে বালকেরা আমাকে ভালবাসে আর যাদের প্রতি আমারও ভালোবাসা অপরিসীম তারা গর্ববোধ করবে এই ভেবে যে তারা যাঁকে ভক্তি-শ্রদ্ধা করে তিনি এই সম্মানে ভূষিত হয়েছেন; এই বিষয়টি আমাকে গভীরভাবে স্পর্শ করেছিল এবং আমি উপলব্ধি করলাম আমার দেশবাসীরা আমার এই সম্মানের অংশীদার হবেন আর নিজেদের সম্মানিত বোধ করবেন

বাকি বিকেলটা এই ভাবে কাটলরাত্রিবেলা একলা ছাদে এসে বসলামনিজেকে প্রশ্ন করলাম – আমি ভিন্ন জাতির লোক, পাশ্চাত্য শিশুদের থেকে কত দূরে, কতশত সমুদ্র ও পর্বত আমাকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছেতা সত্ত্বেও কি কারনে পাশ্চাত্য দেশ আমার কবিতা গ্রহণ করে আমাকে সম্মান জানাল? আমি আপনাদের আশ্বাস দিতে পারি যে নিজেকে গৌরবান্বিত মনে করে আমি এই প্রশ্ন করি নাই; আমার অন্তরে অনুসন্ধান করে আমি নিজেকে প্রশ্ন করেছিলাম এবং তৎক্ষণাৎ নিজেকে ক্ষুদ্র তুচ্ছ মনে হল

আমার মনে পরে আমার বয়স যখন খুব কম তখন থেকেই আমার কাজ সম্প্রসারিত হতে থাকেআমি প্রায় পঁচিশ বছর বয়সে একাকী অত্যন্ত নির্জনে এক অখ্যাত পল্লীগ্রামে গঙ্গানদীর উপর নৌকার মধ্যে বাস করতামশরৎকালে হিমালয়ের সরোবর থেকে আগত বুনো হাঁসেরা আমার একমাত্র জীবন্ত সঙ্গী ছিলসেই নিঃসঙ্গ জীবনে রৌদ্রতাপে প্লাবিত সুরার মতো উন্মুক্ত প্রান্তরে আমি যেন আনন্দে মত্ত হয়ে যেতামআর নদীর কুলকুল ধ্বনি আমার সঙ্গে কথা বলত, প্রকৃতির গোপন কথা বলতআমার দিনগুলি নির্জনে স্বপ্ন দেখে কাটাতাম আর কবিতার মধ্যে আমার স্বপ্ন আর তার রূপ মিশিয়ে দিতামপড়াশুনো করতামআমার চিন্তা-ভাবনা পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে কলকাতার জনগণের কাছে পাঠিয়ে দিতামআপনারা ভালোভাবে বুঝতে পারছেন আমার এই জীবন পাশ্চাত্যের জীবন থেকে সম্পূর্ণ পৃথক ছিলআমি জানিনা পাশ্চাত্যের কবি বা লেখকদের মধ্যে কেউ তাদের কম বয়সের বেশীরভাগ সময় এমন সম্পূর্ণ নির্জনতায় অতিবাহিত করেছেন কিনাআমি প্রায় নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি তা সম্ভব নয় এবং তেমন নির্জনবাসের কোনো স্থান পাশ্চাত্য জগতে নাই। 
 
এইভাবে আমার জীবন বয়ে চলেছিলঐ সময় আমি আমার দেশবাসীর কাছে গুপ্ত ছিলাম অর্থাৎ আমি বলতে চাই যে আমার প্রদেশের বাইরে আমার নাম প্রায় কেউ জানত নাকিন্তু ঐ গোপনীয়তার মধ্যে আমি তৃপ্ত ছিলামঐ গোপনীয়তা আমাকে জনতার কৌতূহল থেকে রক্ষা করেছিল। 
 
তারপর একসময় আমি অনুভব করলাম আমার অন্তর চাইছে এই নির্জনতা থেকে বেরিয়ে এসে আপন মানুষদের জন্য কিছু করতে; কেবলমাত্র আমার স্বপ্নের রূপ দেবার জন্য নয় এবং জীবনের সমস্যাগুলি গভীরভাবে চিন্তা করার জন্য নয়, আমার আপন মানুষদের জন্য কিছু নির্দিষ্ট কাজের, কিছু নির্দিষ্ট সেবার মাধ্যমে আমার আদর্শ রূপায়িত করার চেষ্টা করতে। 
 
আর একটা জিনিষ, একটা কাজ আমার মনে হল যে, শিশুদের শিক্ষা দিতে হবেএর অর্থ এই নয় যে আমি এই শিক্ষকতা কাজের জন্য উপযুক্ত ব্যাক্তি, কারণ প্রথাগত শিক্ষার পুর্ণ সুযোগ আমি পাই নাইসেজন্য কিছুদিনের জন্য এ কাজের ভার গ্রহণ করতে ইতস্তত করেছিলামকিন্তু আমি অনুভব করলাম যে প্রকৃতির প্রতি আমার গভীর ভালবাসা আছে সুতরাং স্বাভাবিক ভাবে শিশুদের প্রতিও আমার ভালবাসা আছেএই প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে ছিল শিশুদের বড়দের মতো আনন্দ, জীবন ও প্রকৃতির সঙ্গে যোগাযোগের পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়াশৈশবে আমি নিজে বহুবিধ বাধানিষেধের সম্মুখীন হয়ে কষ্ট পেয়েছিএই বাধানিষেধের ফলে অধিকাংশ ছেলে বিদ্যালয়ে শাস্তিভোগ করেআমাকে শিক্ষার যন্ত্রের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিলশিক্ষার যন্ত্র জীবনের আনন্দ ও স্বাধীনতাকে চুর্ন-বিচুর্ন করে দেয়তার ফলে শিশুদের এমন অতৃপ্ত পিপাসা থাকেআমার উদ্দেশ্য ছিল বড়দের মতো শিশুদের স্বাধীনতা ও আনন্দ দেওয়া। 
 
এই উদ্দেশ্যে আশপাশ থেকে কয়েকজন বালক পেলামতাদের আমি পড়াই ও সুখী করার চেষ্টা করিআমি তাদের খেলার সঙ্গী, তাদের বন্ধুতাদের জীবনে আমি অংশীদার হয়ে যাই এবং অনুভব করি আমি এই দলের সবচেয়ে বড় শিশুএই রকম স্বাধীনতার পরিবেশে আমরা সকলে একত্রে বয়ঃপ্রাপ্ত হতে থাকলাম

শিশুদের উদ্যম ও আনন্দোচ্ছাসে, তাদের কথাবার্তায় ও গানে বাতাস আত্মার পরিতৃপ্তিতে পূর্ণ থাকতআর আমি তা প্রতিদিন আত্মস্থ করতামসূর্যাস্তের সময় সন্ধ্যাবেলা প্রায়ই একেলা বসে ছায়াঢাকা রাস্তার পাশের গাছগুলিকে দেখতাম আর বিকেলের নিস্তব্ধতায় বাতাসে ভেসে আসা শিশুদের কণ্ঠস্বর স্পষ্ট শুনতে পেতামআর আমার মনে হতো এই কলরব, সঙ্গীত এবং আনন্দধ্বনি ঐ গাছগুলির মতো পৃথিবীর অন্তর থেকে বেরিয়ে আসছে যেমন জীবনের ঝর্ণাধারা অনন্ত আকাশের গভীর অন্তরের দিকে ধাবিত হয়এটা একটা প্রতীক-স্বরূপআমার মনের সামনে প্রতিভাত হতো মনুষ্য জীবনের সমস্ত কোলাহল, আনন্দের সমগ্র প্রকাশ এবং মানুষের উচ্চাকাঙ্ক্ষা মানবতার অন্তর থেকে উত্থিত হয়ে আকাশ পর্যন্ত ছড়িয়ে আছেআমি দেখতে পেতাম এবং আমি জানি যে আমরা এই বয়স্ক শিশুরা আমাদের উচ্চাকাঙ্খার কোলাহল অসীমের কাছে পাঠিয়ে দিয়ে থাকিআমার অন্তরের অন্তঃস্থলে আমি তা অনুভব করতাম। 
 
এই আবহাওয়া ও পরিবেশে আমি গিতাঞ্জলির কবিতাগুলি লিখতাম এবং মধ্যরাত্রে ভারতের আকাশে উজ্জ্বল নক্ষত্রদের নীচে আমি সেগুলি আপনমনে গাইতামখুব সকালে এবং বিকালে সূর্যাস্তের দীপ্ত আলোকে আমি এই গানগুলি রাতভোর লিখতামপরদিন আবার উদ্বুদ্ধ হয়ে এবং বৃহত্তর পৃথিবীর অন্তরের সাক্ষাৎ পেয়ে লিখতে আরম্ভ করতাম

আমি দেখতে পেতাম নিঃসঙ্গ জীবন থেকে বেরিয়ে এসে এই উৎফুল্ল শিশুদের সঙ্গে থাকা এবং মানুষের সেবা করা ছিল আমার বৃহত্তর জগতে তীর্থযাত্রা করার প্রস্তাবনা সূচনা মাত্রএখান থেকে বেরিয়ে পাশ্চাত্যের মানবতার সংস্পর্শে আমার জন্য তীব্র আকাঙ্খ্যা ছিলকারণ আমি অবগত ছিলাম যে বর্তমান যুগ পাশ্চাত্যের অসাধারণ প্রাচুর্যে ভরা প্রাণচঞ্চল মানুষের যুগ

সমস্ত পৃথিবীর শক্তি তার (পাশ্চাত্যের) আছেসকল সীমানার বাইরে তার জীবন উপচে পড়ছেতার বাণী মহান ভবিষ্যতের কাছে পাঠাচ্ছেআমি অনুভব করতাম মৃত্যুর পূর্বে একবার পাশ্চাত্যে; সেই স্বর্গীয় মানুষের বাসস্থান তাঁর মন্দিরে, তাঁর গোপন পবিত্র স্থানে সেই ব্যাক্তির সঙ্গে অবশ্যই দেখা করবআমি ভাবতাম সেই স্বর্গীয় ব্যাক্তি তাঁর সমস্ত শক্তি ও উচ্চাকাঙ্খা নিয়ে পাশ্চাত্যে বাস করছেন। 
 
সেইজন্য আমি বেরিয়ে পড়লামগীতাঞ্জলীর কবিতাগুলি বাংলায় লেখার পর সেগুলি ইংরাজিতে অনুবাদ করেছিলামঐ ভাষায় আমার আত্মবিশ্বাস না থাকায় সেগুলি প্রকাশের কোন ইচ্ছা ছিল নাকিন্তু পশ্চিমে আসার সময় পাণ্ডুলিপিটি আমার সঙ্গে ছিলআপনারা জানেন কবিতাগুলি ব্রিটিশ জনসাধারণের সামনে উপস্থিত করা হলে তাঁরা সকলেই এবং আগেই জাদের পাণ্ডুলিপি পড়ার সুযোগ হয়েছিল তাঁরা সকলেই সেগুলি অনুমোদন করলেনআমাকে গ্রহণ করা হল এবং শীঘ্রই পাশ্চাত্যের হৃদয় খুলে গেল

আমার কাছে এটা একটা অলৌকিক ঘটনা এইজন্য যে আমি পঞ্চাশ বছর সক্রিয় কাজকর্ম থেকে বহুদূরে অবস্থান করেছি, পাশ্চাত্য থেকে বহুদূরে বাস করেছি, অথচ সেই আমাকে প্রায় এক মুহূর্তে পশ্চিম তাঁদের আপন কবি হিসেবে স্বীকৃতি দিলেনএটা আমার কাছে বিস্ময়কর ছিল কিন্তু আমার মনে হয়েছিল সম্ভবত এর কোন গভীর তাৎপর্য আছেপশ্চিমের জীবন ও চরিত্র থেকে পৃথক থেকে যে সব বছরগুলি আমি নির্জনে বাস করেছি সেগুলি গভীর বিশ্রাম বোধ, শান্তি ও চিরন্তন অনুভূতি বহন করে এনেছিলপ্রকৃত পক্ষে এই অনুভূতিগুলিই পশ্চিমের লোকের একান্ত প্রয়োজন ছিল তাঁদের অতি কর্মব্যাস্ত জীবনেতাঁরা তাঁদের অন্তরের অন্তঃস্থলে শান্তির জন্য, অসীম শান্তির জন্য এখন পিপাসিতঅল্প বয়স থেকে গঙ্গাতীরের সম্পূর্ণ নির্জনতায় তন্ময় থাকার প্রশিক্ষণ আমাকে দক্ষ করে গড়ে তুলেছিলএই সমস্ত বছরের শান্তি আমার স্বভাবের মধ্যে সঞ্চিত ছিলতার ফলে আমি তাকে(শান্তিকে) বের করে এনে পাশ্চাত্য ও তার মানুষদের সামনে তুলে ধরেছিআমি তাঁকে যা অর্পণ করেছি কৃতঞ্জতার সঙ্গে সে তা গ্রহণ করেছে

আমি জানি যে এই প্রশংসা অবশ্যই আমার একার প্রাপ্য নয়আমার মধ্যে যে প্রাচ্য আছে, সেইই তা পাশ্চাত্যকে দিয়েছেআধ্যাত্মিক মানবতার জননী হল প্রাচ্যপাশ্চাত্য, তার শিশুরা খেলাধুলা করার সময় আহত হলে কিংবা চরম ক্ষুধার কালে প্রাচ্যের প্রশান্ত জননীর দিকে কি মুখ ফেরায় না? তারা কি তাঁর নিকট খাদ্যের আশা করে না? ক্লান্তির সময় রাত্রিকালের বিশ্রাম আশা করে না? তাঁর কি আশাহত হবে!

সৌভাগ্যক্রমে আমি ঠিক সেই মুহূর্তে এসে পড়েছিলাম যখন পাশ্চাত্য আবার প্রাচ্যের দিকে মুখ ফিরিয়ে পুষ্টিকর খাদ্য চাইছিলকারন আমি প্রাচ্যের প্রতিনিধি ও প্রাচ্যের বন্ধুরা আমাকে পুরস্কৃত করেছে

আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে পারি যে পুরষ্কার আপনারা আমাকে দিয়েছেন তা আমি নিজের জন্য ব্যয় করে নষ্ট করি নাইআমার একার তা গ্রহণ করার অধিকার নেইসেজন্য আমি তা অপরের জন্য খরচ করেছিআমার প্রাচ্যের সন্তানদের ও ছাত্রদের উদ্দেশ্যে আমি তা উৎসর্গ করেছিযেমন বীজের মতো মাটিতে বপন করা হলে সেই বীজ যেমন বপনকারীদের কাছে পুনরায় ফিরে আসে, তেমনি তাঁদের উপকারে আসার জন্য ফলদানের আশা করছেআমি যে অর্থ আপনাদের নিকট থেকে পেয়েছি তা আমি সম্প্রতি প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সংরক্ষন ও পরিচালনার জন্য ব্যয় করেছিআমি মনে করি পশ্চিমের ছাত্ররা অবশ্যই এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসবে এবং প্রাচ্যের ভাইদের সঙ্গে মিলিত হয়ে একত্রে কাজ করবে এবং প্রাচ্যে যে আধ্যাত্মিক সম্পদের ভাণ্ডার শত শত বছর ধরে গুপ্ত অবস্থায় রয়েছে তা উদ্ধার করার চেষ্টা করবে এবং বাস্তবায়িত করবেএই সম্পদ সর্বমানবের প্রয়োজনে লাগবে

আমি আপনাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে ভারতীয় সভ্যতার অতিত গৌরবের দিনে তাঁর মহা বিশ্ববিদ্যালয় ছিলআলো জ্বালানো হলে তার উজ্জ্বলতা কেবলমাত্র স্বল্প পরিধিতে সীমাবদ্ধ থাকে না, পুরো সংসারে ছড়িয়ে পরেভারতীয় সভ্যতা তার ঔজ্জ্বল্য, জ্ঞান ও সম্পদে পূর্ণ ছিলএই সম্পদ সে শুধুই তার নিজের সন্তানদের জন্য ব্যাবহার করা হতো না, ভারতের দ্বার খোলা ছিল সকল জাতির মানুষের আতিথেয়তার জন্যচিন, জাপান, পারস্য ও অন্যান্য দেশের মানুষেরা সর্বকালের শ্রেষ্ঠ উপহার সর্বমানবের জন্য উৎসর্গিত এই সম্পদ গ্রহণের সুযোগ লাভ করেছেনউদার হস্তে ভারত তা বণ্টন করেছেআপনারা জানেন আমাদের দেশের ঐতিহ্য ছিল শিক্ষাদানের পরিবর্তে শিক্ষার্থীর কাছ থেকে কখন কোন পার্থিব পারিশ্রমিক গ্রহণ না করাকারন ভারতীয়রা বিশ্বাস করি যে জ্ঞানী ব্যাক্তির কর্তব্য ও দায়িত্ব হল তাঁর জ্ঞানের বিতরন করাকেবলমাত্র ছাত্ররা শিক্ষকের নিকটে এসে জানবে তা কিন্তু নয়, শিক্ষক স্বয়ং তাঁর জীবনের নিজস্ব শ্রেষ্ঠ উপহার সকল প্রার্থীকে দান করে তাঁর জীবনের ব্রত অবশ্যই সফল করবেনএইভাবে স্বতপ্রবৃত্ত হয়ে ভারতের সঞ্চিত জিনিষ দান করা ও নিজস্ব শ্রেষ্ঠ জিনিষ নিবেদন করা সম্ভব হয়েছিলএইগুলি ছিল এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সাফল্যের উৎস এবং সেগুলি ভারতের অন্যান্য প্রদেশে স্থাপিত হতে শুরু করেছিল। 
 
আমি অনুভব করি,বর্তমানে আমরা অন্য কোন বিপর্যয়ে নয়, বিচ্ছিন্নতা ও নির্জনতার মধ্যে বাস করছিতার ফলে মানব্জাতিকে আতিথেয়তা অর্পণ করতে এবং পৃথিবীকে আমাদের শ্রেষ্ঠ সম্পদের ভাগ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানাতে পারছি নাআমরা সতাধিক বছর ধরে আমাদের নিজস্ব সভ্যতার প্রতি আস্থা হারিয়েছিআমরা পাশ্চাত্যের সংস্পর্শে এসে দেখলাম, তাঁরা প্রাচ্যের মানুষ ও সংস্কৃতি অপেক্ষা পার্থিব সকল বিষয়ে অসাধারণ উন্নতআর শিক্ষাক্ষেত্রে আমরা নিজস্ব সংস্কৃতির জন্য কোনও ব্যাবস্থা রাখি নাইএইভাবে আমরা কেবলমাত্র উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত গুপ্তধনের সেই বৃহতের স্পর্শ থেকে বঞ্চিত হচ্ছি তাই নয়, আমাদের নিজস্ব জিনিষ মহা-সম্মানের সঙ্গে বিতরন করা থেকে বঞ্চিত হচ্ছিএ জিনিষ অন্যের নিকট ভিক্ষা করে পাওয়া নয় কিংবা ঋণ করা সংস্কৃতি নয়চিরন্তন ছাত্রের মত থাকা। 
 
কিন্তু সময় এসেছে, এখন আমরা এমন সুযোগ নষ্ট করব নাআমাদের যা আছে তা আমরা প্রাণপণ চেষ্টায় খুঁজে বের করার চেষ্টা করবআর আমাদের দারিদ্র অপরকে দেখাবার জন্য শতাব্দীর পর শতাব্দী, দেশে দেশে যাব নাআমরা জানি আমরা আমাদের পূর্বপুরুষের কাছ থেকে যা পেয়েছি তা নিয়ে আমাদের গর্ব করার আছে এবং দান করার এমন সুযোগ, কেবলমাত্র আমাদের জনসাধারণের স্বার্থে নয়সমগ্র মানবজাতির স্বার্থেও, নষ্ট করা উচিত নয়। 
 
একটি আন্তর্জাতিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তলার সিদ্ধান্তে আসবার জন্য এই কারণটি আমার পথপ্রদর্শক হয়েছেসেখানে পাশ্চাত্য ও প্রাচ্যের ছাত্ররা মিলিত হয়ে আধ্যাত্মিক খাদ্যের সর্বসাধারণের যৌথ-ভোজে অংশ গ্রহণ করতে পারবে। 
 
আমি গর্বের সঙ্গে বলছি যে আপনাদের দেওয়া পুরষ্কার এই মহৎ উদ্দেশ্যে কিছু অবদান রেখেছেআমার মনের মধ্যে তা ছিল এই উদ্দেশ্যে আমাকে আবার পশ্চিমে আসতে বাধ্য করেছেসুদুর প্রাচ্যে যে ভোজ আপনাদের জন্য অপেক্ষা করছে তা আপনাদের কাছে জানাতে ও সেই ভোজে আমন্ত্রনের জন্য আমি এসেছিআমি ইউরোপের বিভিন্ন দেশ পরিদর্শন করেছি এবং সে সব দেশে উৎসাহব্যাঞ্জক অভ্যর্থনা পেয়েছিএই অভ্যর্থনার নিজস্ব অর্থ আছেতা হল প্রাচ্যকে পাশ্চাত্যের প্রয়োজন আছেআবার পাশ্চাত্যও প্রাচ্যের কাছে অপরিহার্যসুতরাং উভয়ের মিলনের সময় এসেছে

আমি আনন্দিত এই যে আমি এই মহান কালের মহান যুগের একজন মানুষআমি আরও আনন্দিত এই জন্য যে যখন প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্য একত্রে আসছে সেই মহান যুগকে প্রকাশ করার জন্য আমি কিছু কাজ করেছিতারা পরস্পর পরস্পরের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, মিলিত হবার জন্য এগিয়ে আসছেএকত্রিত হবার নিমন্ত্রণ তারা পেয়েছে এবং ভবিষ্যতের নতুন সভ্যতা এবং মহান সংস্কৃতি গড়ে তলার উদ্দেশ্যে হাতে হাত রেখেছে। 
 
আমি অনুভব করি যে আমার লেখার মাধ্যমে সে রকম কিছু ধ্যান-ধারনা আপনাদের কাছে পৌঁছচ্ছে, যদিও অনুবাদের জন্য অস্পষ্ট থেকে গেছেকিছু চিন্তা ভাবনা প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য উভয়ের আবার কিছু প্রাচ্য থেকে পাশ্চাত্যে আসতে সক্ষম হয়েছে এবং এখানেই তার আপন বাসস্থানে অবস্থানের দাবী করছে এবং সাদর অভ্যর্থনা পেতে সমর্থ হয়েছে আর পাশ্চাত্য তা গ্রহণও করেছেখুবই সৌভাগ্যবশত আমি আমার লেখায় যুগোপযোগী কণ্ঠস্বরকে যদি ব্যাখ্যা করতে পেরে থাকি তাহলে আমাকে এই গৌরবময় সুযোগ দেওয়ার জন্য আমি আপনাদের নিকট গভীরভাবে ধন্যবাদের পাত্রযে স্বীকৃতি আমি সুইডেনের নিকটে পেয়েছি তা আমাকে ও আমার কাজকে পাশ্চাত্যের জনগণের সম্মুখে নিয়ে এসেছেজদিয় আমি আপনাদের আশ্বাস দিতে পারি যে এই সম্মান আমাকে কিছুটা সমস্যাতেও ফেলে দিয়েছেআমি যে নির্জন বাসে অভ্যস্ত ছিলাম তা ভেঙ্গে দিয়েছেএই সম্মান আমাকে বিশাল জনসমুদ্রের মধ্যে টেনে বের করে এনেছেআমি এতে কখনো অভ্যস্ত ছিলাম নাএখনো সম্যকরূপে তাহা মানিয়া লইতে পারি নাইআমি যখন পাশ্চাত্যের জনসমাবেশের সম্মুখে দণ্ডায়মান হই, তখন আমার হৃদয় আড়ষ্ট হয়ে যায়যেভাবে আপনারা আমাকে প্রশংসা ও মুগ্ধতার মহান উপহার প্রদান করিতেছেন, আমি এখনো তা গ্রহণ করতে অভ্যস্ত হয়ে উঠতে পারি নিআপনাদের সম্মুখে দাঁড়াইতে আমি লজ্জিত ও অপ্রতিভ হয়ে যাইএখন ঠিক যেমনটা বোধ করছিকিন্তু আমি শুধু এই কথা বলব যে আমি ঈশ্বরের কাছে ধন্যবাদার্হ এই জন্য যে তিনি আমাকে এই বিরাট সুযোগ দিয়েছেন এবং প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের উভয় হৃদয়কে একত্রে নিয়ে এসে মিলিত করার পথে আমি অনুঘটকের কাজ করেছিআমি আজীবন এই ব্রত বহন করে নিয়ে যাব আর যথাসাধ্য করবোপ্রাচ্য আর পাশ্চাত্যের পরস্পর বিদ্বেষভাব অবশ্যই প্রশমিত হবেআমি অবশ্যই যে কোন কিছু করব তাই এই উদ্দেশেই আমি আমার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছি

কোন কিছু প্রত্যাখান করা, কোন জাতিকে ত্যাগ করা, কোন সংস্কৃতিকে পরিহার করে চলা ভারতীয়দের স্বভাববিরুদ্ধভারতের আত্মা সর্বদা একতার আদর্শ ঘোষণা করেছেএই একতার আদর্শ কোন জাতি বা কোন সংস্কৃতিকে বর্জন না করে তার সবকিছু গ্রহণ করেআমাদের আধ্যাত্মিক সহনশীলতার চরমতম লক্ষ্য হল সব কিছুর মধ্যে একাত্ম হয়ে থাকা, সর্বাবস্থায় সব কিছু গ্রহনে সমর্থ হওয়া, মমতা ও ভালোবাসা দিয়ে সবকিছু গ্রহণ করতে সক্ষম হওয়াএই হল ভারতের প্রকৃতি, আত্মার বৈশিষ্টবর্তমানে যখন রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য একই মহান ভারতের সন্তানেরা পাশ্চাত্যকে পরিত্যাগের জন্য চিৎকার করে, তখন আমি আহত হইআমি অনুভব করি এই শিক্ষা তারা পাশ্চাত্য থেকে পেয়েছেএটা আমাদের আদর্শ নয়সকল মানবজাতিকে একত্রিত করার জন্য ভারত সদা জাগ্রত। 
 
এই কারনের জন্য আজো আমরা ভারতে সকল জাতিকে একত্রিত করতে পারি নাইজাতি সমস্যা আমাদের মূল সমস্যা হয়ে উঠেছেসমস্ত মানবজাতিরও সেই একই সমস্যাদ্রাবিড়, মুসলমান, হিন্দু ও অন্যান্য বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের লোকজনের বাস ভারতেসেজন্য কোন রাজনৈতিক ঐক্যের অগভীর বন্ধন আমাদের আকর্ষন করতে পারে না, সন্তুষ্ট করতে পারে না, কখনো আমাদের কাছে বাস্তব হয়ে উঠতে পারে নাইআমাদের আরও গভীরে নামতে হবেআমাদের অবশ্যই অত্যন্ত নিবিড় ঐক্য বিভিন্ন জাতির মধ্যে আধ্যাত্মিক একতা আবিষ্কার করতে হবেমানুষের আত্মার অত্যন্ত গভীরে গিয়ে আমাদের মহৎ বন্ধনের ঐক্যের সন্ধান করতে হবে যা সকল মনুষ্য জাতির মধ্যে দেখা যাবেসেজন্য আমরা সুসজ্জিত হয়ে আছিআমরা আমাদের পূর্বপুরুষের অবিনশ্বর কার্যাবলীর উত্তরাধিকারিঐ গ্রন্থকারগণ একতার ধর্ম ও সমবেদনার কথা ঘোষণা করে গেছেন এবং বলেছেন, ‘যে নিজের মতো করে সকল জীবকে দেখে, যে নিজের মতো করে সকলকে অনুভব করে, সে সত্যকে জানে’সেকথা আর একবার আমাদের উপলব্ধি করতে হবে; কেবলমাত্র প্রাচ্যের সন্তানদের নয়, পাশ্চাত্যের সন্তান্দের অনুভব করতে হবেএই মহান অবিনশ্বর সত্যের কথা তাদেরও স্মরন করিয়ে দিতে হবেঅন্যজাতির মানুষের সঙ্গে, অন্য কোনো ব্যাক্তির সঙ্গে যুদ্ধ করা মানুষের কাজ নয়তার কাজ হল পুনর্মিলন ঘটানো ও শান্তি স্থাপন করা এবং বন্ধুত্ব ও ভালোবাসার বন্ধন পুনরুদ্ধার করাআমরা যুদ্ধবাজ পশু নইআত্মজীবনই আমাদের জীবনকে প্রবলভাবে প্রভাবিত করছেঅস্মিতাই নির্জনতা সৃষ্টি করছেযদি আমরা পবিত্র আধারের হৃদয়ের কাছে, ভালোবাসা এবং সকল জাতির ঐক্যের কাছে যেতে পারি, তাহলে এই সমস্ত মায়া বা মোহ অদৃশ্য হয়ে যাবে

ভারতের সেই মহৎ পূর্বনির্দিষ্ট কাজের ভার নিয়ে আমি এই বিশ্ববিদ্যালয় শুরু করেছিএই সুযোগে আমি আপনাদের এখন অনুরোধ করছি, আপনাদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি আমাদের পাশে এসে হাতে হাত রাখুন, এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে শুধুমাত্র আমাদের হাতে ছেড়ে দেবেন না, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য উভয়ের যৌথ সংগঠন রূপে প্রকাশিত হোক এই প্রতিষ্ঠানআপনাদের বিদ্বান ব্যাক্তিগন এবং অবশ্যই ছাত্ররা আসুন যোগদান করে সাহায্য করুন এই প্রতিষ্ঠানকেআর সঠিকভাবে এটিকে একটি আন্তর্জাতিক ভ্রাতৃ আর সৌহার্দ্যের প্রতিনিধি হিসেবে গড়ে তুলুন

এই জন্যই আমার আপনাদের কাছে আসাআমি মানুষের একতার নামে, ভালোবাসার নামে ও ঈশ্বরের নামে একথা বলার দাবী করছিআপনাদের আসার জন্য অনুরোধ করছি এবং আবারও আমন্ত্রণ জানাচ্ছি




Download and install Avro Keyboard to view the contents.
Mail us to phoenix.punoruday11@gmail.com for pdf version of this Magazine.